সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৪৪ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক: কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার কঢ়াকাটা এলাকায় বন্ধুর মেয়ে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীকে তিন বছর ধরে ধর্ষণ করেছে অপর বন্ধু। ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর ধর্ষণের শিকার মেয়েকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছেন বাবা-মা।
ধর্ষণের শিকার ছাত্রী জানায়, যখন সে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী তখন বাবার বন্ধু প্রথম তাকে ধর্ষণ করে। এরপর থেকে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে তিন বছর ধরে অসংখ্যবার ধর্ষণ করেছে।
বুধবার সকাল ৯টায় ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করতে দেখে ঘরের দরজা আটকে দিয়ে ঘটনাটি জনসম্মুখে আনেন ধর্ষকের স্ত্রী। তবে ধর্ষক প্রভাবশালী হওয়ায় ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে উঠেপড়ে লেগেছে স্থানীয় একটি মহল।
ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার কচাকাটা থানার বলদিয়া ইউনিয়নের পূর্ব কেদার গ্রামে। ওই গ্রামের কুদ্দুস প্রধানীর ছেলে দুই সন্তানের জনক মকবুল হোসেন প্রধানী (৪৫) শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে এসে ২০১৬ সালে ওই ছাত্রীকে প্রথম ধর্ষণ করে। সেই থেকে টানা তিন বছর একই গ্রামের বন্ধুর মেয়ে কাশেম বাজার উচ্চ বিদ্যালয়ের ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করে আসছে।
স্কুলছাত্রী জানায়, বাবার বন্ধু হওয়ায় মকবুল আমাদের বাড়িতে প্রায় যাতায়াত করতো। যাতায়াতের সূত্রে মকবুলের স্ত্রী মুক্তার সঙ্গে আমার সখ্য গড়ে ওঠে। ব্যাপারীটারি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ার সময় মকবুল এবং তার স্ত্রী মুক্তা বেগমের সঙ্গে নাগেশ্বরী উপজেলার শাপখাওয়া গ্রামে মুক্তার বাবার বাড়িতে বেড়াতে যাই। সেখানে মকবুল আমাকে প্রথম ধর্ষণ করে। পরে কান্নাকাটি করলে মকবুল ভয়ভীতি দেখায়। তাই কাউকে বিষয়টি জানাতে পারিনি।
এরপর থেকে আমাকে ধর্ষণ করে আসছে মকবুল। বুধবার সকালে আমাদের বাড়ির মোবাইল নম্বরে ফোন দিয়ে পাশের ভ্যানচালক শামছুলের বাড়িতে ডেকে নিয়ে মিলনে বাধ্য করে মকবুল। ওই সময় মকবুলের স্ত্রী মুক্তা এসে আমাদের হাতেনাতে আটক করে, সেই সঙ্গে আমাকে মারধর করে। পরে একই এলাকার আনছার আলীর ছেলে মিন্টুসহ কয়েকজন গ্রামবাসী আমাকে উদ্ধার করে। ওই সময় মকবুল পালিয়ে যায়।
এদিকে, এ ঘটনার পর লোকলজ্জায় মেয়েকে বাড়িতে ঠাঁই না দিয়ে বের করে দিয়েছেন বাবা-মা। পরে গ্রামবাসী মেয়েটিকে প্রতিবেশী জুরান আলীর বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখান থেকে মেয়েটিকে ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেনের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়।
একই এলাকার সাবেক ইউপি সদস্য গোলাম হায়দার বলেন, এ ঘটনার পর মেয়েটিকে বাড়িতে জায়গা দেয়নি তার বাবা। তাই স্থানীয় ইউপি সদস্যের জিম্মায় মেয়েটিকে রাখা হয়েছে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে স্থানীয় ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেন বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমরা পারিবারিকভাবে আলোচনা করে যাচ্ছি, দেখি শেষপর্যন্ত কি করা যায়। সমাধান করা গেলে করব, না হয় আইনের আশ্রয় নেব।
এ বিষয়ে কচাকাটা থানা পুলিশের ওসি (তদন্ত) শফিকুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে সবার সঙ্গে কথা বলেছি। এখন পর্যন্ত কেউ থানায় অভিযোগ দেয়নি, অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।